কম্পিউটার আবিস্কারে যে মানুষ গুলো ইতিহাসের শাক্ষি।
সাধারণত আমরা জানি যে কম্পিউটার উদ্ভাবনের কাজ শুরু হয় ১৯৩০ দশকের প্রথমাংশে। যদিও ষেসময়কার কম্পিউটার বর্তমান কম্পিউটার গুলর মত ছিল না এবং ব্যবহারও করা হত অন্য প্রয়োজনে। কিছু মেধাবী বিজ্ঞানী এবং গনিতবিদের চিন্তা-ভাবনা, পরিশ্রম, পরীক্ষার সফলতা আজকের এই কম্পিউটার। কম্পিউটার ইতিহাসের পাতায় তাদের নাম আজীবন সরনাক্ষরে লিখা থাকবে।
আধুনিক কম্পিউটারের জনক বলা হয় George Boole কে।যদিও তার ১৮৬৪ সালের মৃত্যুর পর তার কাজটি বিলুপ্ত হয়ে যায়।কিন্তু তিনি যে ধারনা দিয়ে গেছেন তা বর্তমান কম্পিউটারের সাথে স্বাদৃস্য আছে।Boolean বীজগনিতের জনক হচ্ছেন George Boole যা Digital কম্পিউটারের মূল মন্ত্র।
তিনি ১৮১৫ সালে ইংল্যান্ডে জন্মগ্রহন করেন। সে কিশোর বয়স থেকেই শিক্ষকতা শুরু করেন।এমনকি তিনি নিজস্ব বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন বিশ বছর বয়সে। তিনি ৩৪ বছর বয়সে সদেশ তেগ করে আয়ারল্যান্ড চলে যান এবং Queen’s কলেজে প্রথমেই গনিত বিষয়ের প্রফেসর হিসেবের নিযুক্ত হন এবং তিনি আয়ারল্যান্ডেই মৃত্যু বরণ করেন। সে তার বীজগনিতে দর্শন থেকে লজিককেই প্রাধান্য দেন। তার সবচেয়ে বড় অর্জন হচ্ছে সে লজিকের বিভিন্ন পর্যায়গুলোকে প্রকাশ করার জন্য বীজগনিতকে ব্যবহার করেন। উনিশ শতকের মাঝামাঝি লজিক ও গনিতের মধ্যে সর্ম্পককে বিশ্লেষন করে অনেক গুলো প্রবন্ধ রচনা করেন। পরে কম্পিউটার নিয়ে গবেষনায় তার পরবর্তি বিজ্ঞানীরা এই প্রবন্ধ গুলোর সাহায্য নেন। এখনও বড় বড় সার্চ ইন্জিন গুলো তার বীজগনিতের বেশ কিছু Boolean শব্দ ব্যবহার করে থাকেন।
দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধের সময় কনস্ট্রাকশন ইন্জিনিয়ার ছিলেন Konrad Zuse। ইনি ১৯১০ সালে বার্লিনে জন্মগ্রহন করেন। তাকে আনঅফিশিয়ালী মর্ডান কম্পিউটারের আবিস্কারক বলা হয়। কনস্ট্রাকশনের সবচেয়ে কঠিন কাজ হল বড় বড় ক্যালকুলেশনের স্লাইড রুল বা মেশিনকে জোড়া লাগানোর সময় বা বদলানোর সময়ের ক্যালকুলেশন ও তাকে মনে রাখা। তিনি এমন একটা উপায় আবিস্কার করতে চেয়েছিলেন যাতে এই বড় ক্যালকুলেশন গুলো সহজেই করা যায় এবং তা ওই প্রসেসর সংরক্ষন করা যায়। ১৯৩৬ সালে ইনি প্রথম বাইনারী কম্পিউটার তৈরী করেন যার নাম দেন Z1। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক ভাবে দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধে এটি ধংস্ব হয়ে যায়। Konrad Zuse তার পর বাইনারী কম্পিউটার নিয়ে কাজ করতে থাকেন এবং ১৯৪০ সাল পর্যন্ত Z2, Z3, Z4 নামক আরো তিনটি কম্পিউটার তৈরী করেন।যা কম্পিউতার উদ্ভাবনের জন্য খুবি গুরুত্বপূর্ণ ছিল।
John Von Neumann
১৯০৩ সালে হাঙ্গেরীতে জন্মগ্রহন করেন John Von Neumann। তিনি ছিলেন বিস্ময়কর রকম মেধাবী একজন বিজ্ঞানী ও গনিতবিদ। বর্তমান কম্পিউটারের ভিত্তি তিনিই গড়েছেন। John Von এর আগে অধিকাংশ গনিতবিদরা কম্পিউটারকে গানিতিক ধারনা থেকে লব্ধ ডাটা বা উপাত্ত বের করার কাজে লাগাতো। কিন্তু তিনি কম্পিউটারের প্রসেসিং ক্ষমতাকে গনিতের সমাধানের কাজে ব্যবহার করতে চাইলেন । তিনি তার মেধাকে EDVAC কম্পিউটার তৈরীতে প্রয়োগ করলেন এবং তৈরী করলেন যা পুরো প্রগ্রামকে ধারন করতে পারত। পরে তিনি IBM কোম্পানীতে যোগ দেন এবং তার দায়িত্ব ছিল কম্পিউটারের নতুন নতুন ধারনাকে খুজে বের করা ও তা নিয়ে গবেষনা করে বাস্তবে রুপ দেয়া। পরবর্তীতে সে IBM কোম্পানীর একজন প্রভাবশালী ব্যক্তিতে পরিনত হন।
Alan Turing
১৯১২ সালে ইংল্যান্ডে জন্মগ্রহন করেন Alan Turing। Alan ক্যামব্রীজ ইউনিভার্সিটিতে গনিত নিয়ে পড়াশুনা করেন। তিনি John Von Neumann এর প্রকাশিত ধারনা দ্বারা বিশেষ ভাবে প্রভাবিত ছিলেন। Alan দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধের সময় German secret code কে crack ও decode করে আলোচনায় আসেন। অনেকের ধারনা Alan ই প্রথম ইলেক্ট্রনিক কম্পিউটার এর ডিজাইন করেন। Alan ACE (Automatic Computing Engine) ডিজাইন করেন যদিও এটি বাস্তবে রুপ পায়নি। পরে ১৯৫০ সালের দিকে ইনি John Von Neumann এর ধারনাকে বাস্তবে রুপ দেন তার “Turing Test” প্রযেক্টে যা কিনা ইতিহাসে কম্পিউটারের Intelligence এর প্রথম Test হিসাবে বিবেচিত হয়।
কম্পিউটার ইতিহাস যতই আলোচনা হচ্ছে ততই এর আবিস্কারক নিয়ে বির্তক বাড়ছে। বিভিন্ন বিজ্ঞানী বিভিন্ন সময় এক সাথে কাজ করে একটি Theory দাড় করিয়ে তাকে মডেল হিসাবে প্রকাশ করেছে তাই একক ভাবে কাউকে কম্পিউটারের আবিস্কারকের কৃতিত্ব দেয়া এখনও পর্যন্ত সম্ভব হয়নি। কেউ বিশ্বাস করে EDVAC কম্পিউটারের সাথে বর্তমান কম্পিউটারের কোন সম্পর্ক নেই আবার কেউ মনে করে EDVAC কম্পিউটারই হচ্ছে বর্তমান কম্পিউটারের grandfather। তবে সাধারন ভাবে আমরা বলতে পারি যে এক জেনারেশন বিজ্ঞানী থেকে আর এক জেনারেশন বিজ্ঞানীরা কম্পিউটারের ধারনাকে বহন করেছে এবং বিভিন্ন পরিক্ষা নিরীক্ষা বিবর্তনের মধ্য দিয়ে কম্পিউটার আজকের এই পর্যায়ে এসেছে। আর এর পিছনে কম্পিউটারের জনক যেই হোক না কেন এই সমস্ত বিখ্যাত বিজ্ঞানীদের কিছু না কিছু অবদান আছে।
কম্পিউটার আবিস্কারে যে মানুষ গুলো ইতিহাসের শাক্ষি।
Reviewed by sohel
on
00:42
Rating:
Geen opmerkings nie: