লজ্জা নয়, যেগুলো ছেলে মেয়ে সবার জানা উচিৎ – বয়ঃসন্ধি ও যৌন আচরন


বয়ঃসন্ধি (ইংরেজি: Puberty) একটি সুনির্দিষ্ট প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে একটি শিশুর শরীর একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের শরীরে রূপান্তরিত হয় এবং প্রজননের সক্ষমতা লাভ করে। মস্তিষ্ক থেকে গোনাডে (ডিম্বাশয় ও শুক্রাশয়) হরমোন সংকেত যাবার মাধ্যমে এটির সূচনা ঘটে। ফলশ্রুতিতে গোনাড বিভিন্ন ধরনের হরমোন উৎপাদন শুরু করে যার ফলে মস্তিষ্ক, অস্থি, পেশি, ত্বক, স্তন, এবং জনন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গসমূহের বৃদ্ধি শুরু হয়। বয়ঃসন্ধির মধ্যভাগে এই বৃদ্ধি ত্বরান্বিত হয় এবং বয়ঃসন্ধি শেষ হবার মাধ্যমে এই বৃদ্ধি সম্পূর্ণ হয়। বয়ঃসন্ধি শুরুর পূর্বে ছেলে ও মেয়ের মধ্যে পার্থক্য প্রায় সম্পূর্ণটাই বলতে গেলে শুধু যৌনাঙ্গের ভেতর সীমাবদ্ধ থাকে। বয়ঃসন্ধির সময়, শরীরের গঠনের আকার-আকৃতি, গুরুত্ব ও কাজে প্রধান পার্থক্যগুলো প্রতীয়মান হয়। এদের মধ্যে খুবই অবশ্যম্ভাবী পরিবর্তনগুলোকে সেকেন্ডারি যৌন বৈশিষ্ট্য বলা হয়।
আক্ষরিক অর্থে (এবং এই নিবন্ধটিতে যে সম্মন্ধে বলা হয়েছে) বয়ঃসন্ধি বলতে বোঝায় যৌন পরিপক্কতার জন্য শরীরে যেসকল পরিবর্তন আসে সেটাকে। বয়ঃসন্ধিকালের উন্নতিতে মনোসামাজিক ও সাংস্কৃতিক ভূমিকা এটার অন্তর্ভুক্ত নয়। বয়ঃসন্ধিকাল হচ্ছে শৈশব ও সাবালকত্বের মধ্যবর্তী একটি মানসিক ও সামাজিক ক্রান্তিকাল। বয়ঃসন্ধিকাল, বয়ঃসন্ধির সময় দ্বারা প্রভাবিত হয় বটে কিন্তু এটা আলোচনার সীমারেখা যথাযথভাবে সংজ্ঞায়িত করা যায় না। সাধারণত বয়ঃসন্ধিকালের ব্যাপারে আলোচনার ক্ষেত্রে কৈশোর সময়কার শারীরিক পরিবর্তনের চেয়ে সেই সময়ের মনোসামাজিক ও সাংস্কৃতিক এবং আচার-আচরণের বিকাশকেই বেশি প্রাধান্য দেওয়া হয়।

ছেলে ও মেয়ের বয়ঃসন্ধির মধ্যে পার্থক্য

শিশুর ও কিশোর-কিশোরীর দৈহিক বৃদ্ধির একটি তূলনামূলক রেখাচিত্র। বয়ঃসন্ধি সবুজ রংয়ে ডানপাশে নির্দেশিত হয়েছে।
শিশুর ও কিশোর-কিশোরীর দৈহিক বৃদ্ধির একটি তূলনামূলক রেখাচিত্র। বয়ঃসন্ধি সবুজ রংয়ে ডানপাশে নির্দেশিত হয়েছে।
যদিও বয়ঃসন্ধি শুরুর সাধারণ বয়সসীমার মধ্যে ব্যাপক তারতম্য রয়েছে, কিন্তু গড়পড়তা মেয়েদের বয়ঃসন্ধির প্রক্রিয়া ছেলেদের ১-২ বছর আগে শুরু হয় (গড় বয়স: মেয়েদের ৯-১৪ বছর, এবং ছেলেদের ১০-১৭ বছর) এবং অল্পসময়ের মাঝেই সম্পূর্ণতাপ্রাপ্ত হয়। সাধারণত বয়ঃসন্ধির প্রথম লক্ষণ দেখা দেয়ার চার বছরের মধ্যেই মেয়েরা তাদের উচ্চতা ও প্রজনন পরিপূর্ণতা লাভ করে। এক্ষেত্রে তুলনামূলকভাবে ছেলেদের বৃদ্ধিটা হয় একটু ধীরে, কিন্তু সাধারণত বয়ঃসন্ধির পরিবর্তন শুরুর ছয় বছরের মধ্যে তারাও পরিপূর্ণতা লাভ করে।
পুরুষের ক্ষেত্রে, টেস্টোস্টেরনের অ্যান্ড্রোজেন হলো প্রধান যৌন স্টেরয়েড। অল্পসময়ের মধ্যেই টেস্টোস্টেরনের প্রভাবে সকল পুরুষালি বৈশিষ্ট্যের প্রকাশ ঘটে। পুরুষে টেস্টোস্টেরনের রাসায়নিক রূপান্তরের ফলে অন্যতম যে স্টেরয়েড উৎপন্ন হয় তা হলো এস্ট্রাডিওল। যদিও এটার সীমাবৃদ্ধি ঘটে মেয়েদের চেয়ে অনেক ধীরে ও দেরিতে। ছেলেদের বৃদ্ধি ত্বরান্বিত হয় মেয়েদের তুলনায় আরো পরে, অনেক ধীরে; এবং এপিফিসেস জোড়া না লাগার আগ পর্যন্ত এই বৃদ্ধি বিদ্যমান থাকে। বয়ঃসন্ধি শুরু হবার আগে উচ্চতায় ছেলেরা মেয়েদের তুলনায় ২ সে.মি. খাটো থাকলেও একজন প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষ, একজন প্রাপ্তবয়স্ক মহিলার তুলনায় গড়ে ১৩ সে.মি. (৫.২ ইঞ্চি) খাটো।
মেয়েদের ক্ষেত্রে বৃদ্ধিটা নির্ধারিত হয় এস্ট্রাডিওল ও ইস্ট্রোজেন হরমোন দ্বারা। যেখানে এস্ট্রাডিওল স্তন ও জরায়ুর বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। এটা প্রধান হরমোন যা বয়ঃসন্ধিকালীন বৃদ্ধি ত্বরান্বিত করে এবং এপিফিসিয়াল পরিপক্কতা ঘটায় এবং সম্পূর্ণ করে। ছেলেদের চেয়ে এস্ট্রাডিওল সীমার বৃদ্ধি মেয়েদের বেশি ও আগে হয়।

বয়ঃসন্ধির শুরু

বয়ঃসন্ধির শুরু হয় GnRH (জিএনআরএইচ)-এর উচ্চ স্পন্দনের মাধ্যমে, যা যৌন হরমোনের ক্ষরণ বাড়ায়।
জিএনআরএইচ বৃদ্ধির কারণ ধারবাহিকভাবে চলতে থাকে। বয়ঃসন্ধি সাধারণত পুরুষের ৫৫ কে.জি. এবং মেয়েদের ৪৭ কে.জি. ওজনে শুরু হয়। শরীরের ওজনের এই পার্থক্যের কারণ জিএনআরএইচ বৃদ্ধি, যা লেপ্টিনের (এক প্রকার প্রোটিন হরমোন) চাহিদা বাড়িয়ে দেয়। এটা জানা যে হাইপোথ্যালামাসে লেপ্টিন গ্রহীতা হিসেবে কাজ করে, যেগুলো জিএনআরএইচ সংশ্লেষ করে। দেখা যায় যাদের লেপ্টিন উদ্দীপ্ত হতে দেরি হয় তাদের বয়ঃসন্ধি শুরু হতেও দেরি হয়। লেপ্টিনের পরিবর্তন বয়ঃসন্ধির প্রারম্ভেই শুরু হয়, এবং প্রাপ্তবয়স্কতাপ্রাপ্তির সাথে সাথে শেষ হয়। যদিও বয়ঃসন্ধির শুরুর সময় বংশানুক্রমিক কারণেও পরিবর্তিত হতে পারে।

ছেলেদের ক্ষেত্রে শারীরিক পরিবর্তন

শুক্রাশয়ের আকার, কাজ, এবং উর্বরতা
ছেলেদের ক্ষেত্রে শুক্রাশয়ের বৃদ্ধি হচ্ছে শারীরিকভাবে প্রতীয়মান হওয়া বয়ঃসন্ধির প্রথম লক্ষণ। একে গোন্যাডার্কি (gonadarche) বলে। এক বছর বয়স থেকে বয়ঃসন্ধির প্রারম্ভ পর্যন্ত ছেলেদের শুক্রাশয়ের বৃদ্ধি হয় খুবই কম। গড় হিসাব করলে আয়তন হয় ২-৩ সি.সি. (কিউবিক সেন্টিমিটার/ঘন সেন্টিমিটার) এবং দৈর্ঘ্য হয় ১.৫-২ সে.মি.। বয়ঃসন্ধি শুরুর মাধ্যমে শুক্রাশয়ের বৃদ্ধি শুরু হয়, এবং ছয় বছর পরে সর্বোচ্চ পরিপক্ক আকারপ্রাপ্ত হয়।[৬] যখন গড় আয়তন হয় ১৮-২০ সি.সি., যদিও সাধারণ জনসংখ্যার মধ্যে এ আয়তনের ব্যাপক পার্থক্য দেখা যায়।
শুক্রাশয়ের দুটি প্রাথমিক কাজ রয়েছে: প্রথমতঃ হরমোন উৎপাদন এবং দ্বিতীয়তঃ শুক্রাণু উৎপাদন। লেডিগ কোষ, টেস্টোস্টেরন (যা নিচে আলোচনা করা হয়েছে) উৎপাদন করে, যা পুরুষের যৌন পরিপক্কতার বেশির ভাগ পরিবর্তনের কারণ। এছাড়া যৌনকামনা নিয়ন্ত্রণ করে। পুরুষের শুক্রাণু উৎপাদন, এবং যৌন-উর্বরতার বিকাশের সময়কাল খুব একটা সুনির্দিষ্ট নয়। বেশিরভাগ ছেলের বয়ঃসন্ধি পরিবর্তন শুরু হওয়ার পরবর্তী বছরেই সকালের প্রস্রাবে শুক্রাণু উপস্থিতি দেখতে পাওয়া যেতে পারে (এবং কারো ক্ষেত্রে আরো আগেই)। ছেলেদের মধ্যে ১৩ বছর বয়সেই প্রচ্ছন্ন উর্বরতা দেখতে পাওয়া যায়, কিন্তু ১৪-১৬ বছরের আগে পুরোপুরি উর্বরতা আসে না। যদিও, কারো ক্ষেত্রে এই প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন হয় অতি দ্রুত, মাত্র এক বছর পরেই।
শ্রোণীদেশে লোম (পিউবিক হেয়ার)
শ্রোণীদেশীয় লোম সাধারণত যৌনাঙ্গ বৃদ্ধি শুরু হওয়ার কিছুদিন পরেই দেখা যায়। ছেলেদের পিউবিক হেয়ার সাধারণত সর্বপ্রথম দেখা যায় শিশ্নের গোড়ার দিকে। প্রথম কিছু চুলকে বলা হয় দ্বিতীয় পর্ব। তৃতীয় পর্ব শুরু হয় পরবর্তী ৬-১২ মাসের মধ্যে, যখন চুলের পরিমাণ অনেক বেড়ে যায়। চতুর্থ পর্বে, পিউবিক হেয়ার ঘন হয়ে “পিউবিক ট্রায়াঙ্গল” সম্পূর্ণ করে ফেলে। পঞ্চম পর্বে, পিউবিক হেয়ার নিচের দিকে উরুতে এবং উপরের দিকে নাভী পর্যন্ত বিস্তৃত হয়, যাকে তলপেটের চুল বা অ্যাবডোমিনাল হেয়ার বলা হয়।
শরীর ও মুখের লোম
পিউবিক হেয়ার দেখা দেয়ার কয়েক মাসের মধ্যেই অ্যান্ড্রোজেনের প্রভাবে শরীরের অন্যান্য অংশে ঘন চুলের অস্তিত্ব দেখা যায়। এদেরকে অ্যান্ড্রোজেনিক চুল বলে। চুলগুলো পর্যায়ক্রমে সারা শরীরে আবির্ভূত হয়। এচুল আবির্ভাবের ক্রমটি হলো: বগলের চুল, পায়ুদেশের চুল, গোঁফ, সাইডবার্ন চুল, অ্যারিওলার পার্শ্বদেশের চুল, এবং দাড়ি। এছাড়া বাহু, পা, বুক, তলপেট, এবং পেছনের চুল আরো বেশি ঘন হয়ে ওঠে। প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষের শরীরের একটা বড়ো অংশ জুড়েই চুলের অস্তিত্ব দেখা যায়। তবে এ চুলের বৃদ্ধিকাল এবং পরিমাণ প্রজাতিভেদে বিভিন্নরকম হতে পারে। বয়ঃসন্ধির সময় পুরুষের ফেসিয়াল হেয়ার (মুখের চুল) সাধারণত একটি নির্দিষ্ট ক্রমে একে একে পরিলক্ষিত হয়। প্রথমে ফেসিয়াল হেয়ার দেখা যায় উপরের ঠোঁটের দুই কোণায়; সাধারণত ১৪ থেকে ১৬ বছর বয়সে। আস্তে আস্তে এই চুল সম্পূর্ণ উপরের ঠোঁটে বিস্তৃতি লাভ করে এবং গোঁফ-এ পরিণত হয়।

মেয়েদের ক্ষেত্রে শারীরিক পরিবর্তন

স্তনবৃদ্ধি
মেয়েদের ক্ষেত্রে বয়ঃসন্ধির প্রথম লক্ষণ হিসেবে এক বা উভয় স্তনের অ্যারিওলার (areola) নিচে সাধারণত একটা শক্ত ও কোমল পিণ্ড দেখা যায়। এ ব্যাপারটা গড়ে ১০.৫ বছর বয়সে ঘটে। এটাকে বলা হয় থেলারশে। এটা হচ্ছে স্তনবৃদ্ধির দ্বিতীয় পর্ব যা বয়ঃসন্ধির ট্যানার পর্ব নামেও পরিচিত (বয়ঃসন্ধি পূর্ববর্তী, স্তন সমান থাকাকালীন সময়টা হচ্ছে প্রথম পর্ব)। এরপর ৬-১২ মাসের মধ্যে স্তন উভয় পাশেই ফুলে ও নরম হয়ে ওঠে। তখন অ্যারিওলার প্রান্ত ছাড়িয়ে স্তনের বর্ধিত অংশ দেখা ও অনুভব করা যায়। এটা হচ্ছে স্তনবৃদ্ধির তৃতীয় পর্ব। পরবর্তী ১২ মাসে (চতুর্থ পর্বে) স্তন পরিণত আকার ও আকৃতি পেতে শুরু করে। তখন অ্যারিওলা ও প্যাপিলা একত্রে মধ্যম আকৃতি বিশিষ্ট একটি উঁচু অংশের (mound) সৃষ্টি করে। (পঞ্চম পর্বে) বেশিরভাগ তরুণীর ক্ষেত্রে এই এই উঁচু অংশটি পরিণত স্তনের গোড়ার দিকের প্রান্তরেখা বা দেহরেখার সাথে মিলিয়ে যায়। অবশ্য এক্ষেত্রে এটা বলা আবশ্যক যে, পরিণত স্তনের আকার ও আকৃতির মধ্যে অনেক পার্থক্য বিদ্যমান তাই চতুর্থ ও পঞ্চম পর্ব সবসময় পৃথকভাবে নির্ণয় করা নাও যেতে পারে।
03
শ্রোণীদেশের কেশ (পিউবিক হেয়ার)
শ্রোণীদেশীয় কেশ বয়ঃসন্ধিতে উপনীত হওয়ার দ্বিতীয় সুস্পষ্ট লক্ষণ, যা থেলারশে শুরু হওয়ার কয়েক মাসের মধ্যেই দেখা যায়। এটাকে পিউবার্কি (pubarche) বলা হয় এবং প্রথমে সাধারণত যোনীর লেবিয়ার আশেপাশেই এই কেশের অস্তিত্ব ফুটে ওঠে।[১২] প্রথম উদ্ভিন্ন কয়েকটি কেশ দ্বিতীয় ট্যানার পর্ব হিসেবে অভিহিত করা হয়। ৬ থেকে ১২ মাসের মধ্যেই এটি তৃতীয় পর্বে পৌঁছায়। তখন কেশরাজি পরিমাণে অনেক বৃদ্ধি পায় এবং শ্রোণীমণ্ডপের ওপরেও দেখা যায়। চতুর্থ পর্বে শ্রোণীদেশীয় কেশ খুব ঘনভাবে “ত্রিকোণ শ্রোণীমণ্ডপ‌” ছেয়ে ফেলে। পঞ্চম পর্বে কেশের সীমা নিচের দিকে উরুতে এবং কখনো কখনো ওপরের দিকে অ্যাবডোমিনাল হেয়ার হিসেবে তলপেটে নাভি পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে। প্রায় ১৫ শতাংশ মেয়ের স্তন বৃদ্ধির আগেই শ্রোণীদেশীয় কেশরাজির আবির্ভাব পরিলক্ষিত হয়।
যোনি, জরায়ু, এবং ডিম্বাশয়
ইস্ট্রোজেন ক্ষরণ বৃদ্ধির ফলশ্রুতিতে যোনির মিউকোসাল পৃষ্ঠের পরিবর্তন হতে থাকে। বয়ঃসন্ধি পূর্ববর্তী উজ্জল লাল ভ্যাজাইনাল মিউকোসার তুলনায় এটি মোটা এবং এর রঙ অনুজ্জল গোলাপী হতে থাকে। ইস্ট্রোজেনের প্রভাবে সাধারণত সাদা রঙের তরল পদার্থও ক্ষরিত হয় (যা সাদাশ্রাব হিসেবে পরিচিত)। থেলারশে পরবর্তী দুই বছরে জরায়ু এবং ডিম্বাশয় আকারে বৃদ্ধি পায় এবং ডিম্বাশয়ের ফলিকলগুলো বড়ো আকৃতিপ্রাপ্ত হয়। ডিম্বাশয় সাধারণত ছোটো ফলিকুলার সিস্ট দ্বারা পরিপূর্ণ থাকে যা আলট্রাসাউন্ডের মাধ্যমে বোঝা যায়।
রজঃচক্র এবং উর্বরতা
প্রথম রজঃচক্রকে মেনারশে বলে এবং সাধারণত থেলারশে শুরু হওয়ার দুই বছর পরে এটা শুরু হয়। আমেরিকান মেয়েদের মধ্যে মেনারশে শুরু হওয়ার গড় বয়স ১১.৭৫ বছর। প্রথম দুই বছর মেনসেস (মাসিক রক্তস্রাব বা মাসিক) অনিয়মিত হয় অর্থাৎ প্রতি মাসে হয় না। উর্বরতার জন্য ডিম্বক্ষরণ (Ovaluation) জরুরি, কিন্তু প্রথম দিকের মাসিকগুলোতে ডিম্বক্ষরণ ঘটতেও পারে আবার নাও ঘটতে পারে। প্রথম রজঃচক্র হওয়ার পরবর্তী প্রথম বছরে (প্রায় ১৩ বছর বয়সে) ৮০% মেয়ের রজঃচক্রে একবার ডিম্বক্ষরণ ঘটে, ৫০% মেয়ের তৃতীয় বছরে (প্রায় ১৫ বছর বয়সে) এবং ১০% মেয়ের ষষ্ঠ বছরে (প্রায় ১৮ বছর বয়সে) একবার ডিম্বক্ষরণ ঘটে।
দেহের আকার, মেদ
মাসিকের সময়, ইস্ট্রোজেন হরমোনের সীমা বৃদ্ধির ফলশ্রুতিতে পেলভিসের অর্ধনিম্নাংশ বা হিপ প্রশস্ত হতে শুরু করে। এর ফলে জন্ম নালি (birth canal) আরো বড়ো হয়। মেদ কলার বৃদ্ধি ছেলেদের চেয়ে মেয়েদের শরীরের বেশি অংশ জুড়ে ঘটে। সাধারণত মেয়েদের শরীরের যেসকল স্থানে মেদ কলার উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায় তার মধ্যে আছে: দুই স্তন, হিপ, নিতম্ব, উরু, উপরের বাহু, এবং পিউবিস। দশ বছর বয়সে, একটি মেয়ের শরীরে একই বয়সের একটি ছেলের তুলনায় গড় চর্বির পরিমাণ থাকে মাত্র ৫% বেশি, কিন্তু বয়ঃসন্ধির শেষে এসে এই পার্থক্য হয় ৫০%-এর কাছাকাছি।

নিউরোহরমোনাল প্রক্রিয়া

হাইপোথ্যালামাস, পিটুইটারি, গোনাড, ও অ্যাড্রিনাল গ্রন্থি নিয়ে অন্তক্ষরা প্রজননতন্ত্র গঠিত। এছাড়া এর সাথে শরীরের আরো অনেক তন্ত্র জড়িত। সত্যিকারের বয়ঃসন্ধিকে ইংরেজিতে সেন্ট্রাল পিউবার্টি বা কেন্দ্রীয় বয়ঃসন্ধি হিসেবে অভিহিত করা হয়, কারণ কেন্দ্রীয় স্নায়ু তন্ত্রের একটি প্রক্রিয়া হিসেবে এই পরিবর্তন শুরু হয়। হরমোনগত বয়ঃসন্ধির সাধারণ বর্ণনা নিচে দেওয়া হলো:
  • মস্তিষ্কের হাইপোথ্যালামাস অংশ জিএনআরএইচ হরমোন ক্ষরণ শুরু করে।
  • পিটুইটারি গ্রন্থির বাহিরের অংশ কাজ করা শুরু করে, এবং এলএইচ ও এফএসএইচ হরমোন ক্ষরণ হওয়া শুরু হয়, ও রক্তের মাধ্যমে তা প্রবাহিত হয়।
  • এলএইচ ও এফএসএইচ হরমোনের প্রভাবে যথাক্রমে ডিম্বাশয় ও শুক্রাশয় কাজ করা শুরু করে। সেই সাথে এরা যথাক্রমে এস্ট্রাডিওল ও টেস্টোস্টেরন উৎপন্ন করা শুরু করে।
  • শরীরে এস্ট্রাডিওল ও টেস্টোস্টেরনের বৃদ্ধি ঘটায় মেয়ে ও ছেলের মাঝে বয়ঃসন্ধিকালীন বৈশিষ্টগুলো প্রকাশ পেতে থাকে।
শরীরে শুরু হওয়া নিউরোহরমোনাল প্রক্রিয়ার এই পরিবর্তন দেখতে ১-২ বছর সময় লাগতে পারে।
[ উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে ]

লজ্জা নয়, যেগুলো ছেলে মেয়ে সবার জানা উচিৎ – বয়ঃসন্ধি ও যৌন আচরন লজ্জা নয়, যেগুলো ছেলে মেয়ে সবার জানা উচিৎ – বয়ঃসন্ধি ও যৌন আচরন Reviewed by sohel on 00:31 Rating: 5

Geen opmerkings nie:

Aangedryf deur Blogger.